আর দশটা দিনের মতো ঈদের দিনটা নয় কারাগারে। আর তাই আনন্দের এদিনটি কারাগারগুলোতেও ভিন্ন আবহে দেখা গেছে। দিনটি ঘিরে কারাবন্দিদের জন্য আয়োজন করা হয় বিশেষ খাবারের। ঈদের নামাজে শরিক হন তারাও। এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে কারাগারে থাকা সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে ডিভিশন পাওয়া বন্দিদের ‘দূরত্ব’ ঘুচে যায়। সবার জন্য থাকবে একই ব্যবস্থা।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকেই বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি আছেন। এবার প্রথমবারের মতো তাদের ঈদুল ফিতরের দিন কাটছে কারাগারের চার দেয়ালের মধ্যে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন সাধারণ বন্দিদের মতোই কারাগারে থাকা ভিআইপিসহ (বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) ডিভিশন পাওয়াদের একই ধরনের খাবার পরিবেশন করা হবে। এদিন সকালের খাবারে রয়েছে পায়েস, সেমাই ও মুড়ি। দুপুরে থাকছে পোলাও বা খিচুড়ি, মুরগির রোস্ট, গরু ও খাসির মাংস, সালাদ, মিষ্টি ও পান। আর রাতে দেয়া হবে ভাত, আলুর দম ও ডিম।
অন্যদিকে সারা বছর সাধারণ বন্দিদের সকালে দেয়া হয় হালুয়া, রুটি ও ডিম। দুপুরের খাবারের তালিকায় থাকে ভাত, ডাল, সবজি। রাতে খাবার দেয়া হয় ভাত, ডাল, মাছ বা গরুর মাংস। আর ডিভিশন পাওয়া বন্দিদের খাবার তাদের পছন্দ অনুযায়ী আলাদা রান্নার ব্যবস্থা করা হয়।
কারা অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, ঈদের দিন কারাগারগুলোর বন্দিদের জন্য ঈদের নামাজের জামাত হয়। উন্নত মানের খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি তাদের জন্য স্বজনদের আনা খাবারও খেতে দেয়া হয়। ঈদের পরদিন যথাযথ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে কারাগারের ভেতরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারবে কারাগারগুলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা মামলায় এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, এমপি, শীর্ষস্থানীয় নেতা ও কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৩১ জন কারাগারে আছেন। তাদের মধ্যে ডিভিশন পেয়েছেন ১০৮ জন, যাদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী ২৯ জন; সাবেক সংসদ সদস্য ২২ জন; সরকারি কর্মকর্তা ৪৪ জন এবং অন্যান্য পেশার ১৩ জন। ডিভিশন পাননি ভিআইপি হিসেবে কারাগারে থাকা ২৩ জন।
সারা দেশের ৬৮ কারাগারে এখন বন্দির সংখ্যা ৬৭ হাজার ৭২৩। এর মধ্যে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দির সংখ্যা ৮ হাজার ১০০।
জানা গেছে, ঈদের পরদিন থেকে তিন দিন বন্দিদের সঙ্গে তাদের স্বজনদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলতে দেয়া হবে। এ সময় স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎও করতে পারবেন তারা।